ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় কুমার নদে দেশীয় অস্ত্র হাতে মহড়া দিয়েছে কিশোর-তরুণদের একটি দল। বুধবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বাইসাখালি, চণ্ডীদাসদী থেকে আতাদী হয়ে পূর্ব সদরদী পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার এলাকায় অন্তত ২০টি স্পিডবোট ও অর্ধশতাধিক ট্রলারে তারা মহড়া চালায়।
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় কিশোরদের অস্ত্রের মহড়া, এলাকায় চরম আতঙ্ক





এ সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে ২ মিনিটের একটি ভিডিও, যেখানে দেখা যায় কয়েকজন তরুণ স্পিডবোট থেকে রামদা ও চায়নিজ কুড়ালসহ দেশীয় অস্ত্র প্রদর্শন করছে। দীর্ঘ আট বছর ধরে নৌকাবাইচ বন্ধ থাকলেও প্রতিবছর ভাদ্র মাসের শেষ দিনে স্থানীয় তরুণেরা এভাবে নদীতে মহড়া দিয়ে আসছে। তবে অস্ত্র হাতে প্রকাশ্যে মহড়া দেওয়ার ঘটনা এবারই প্রথম।
ঘটনার খবর পেয়ে রাতেই ভাঙ্গা থানা-পুলিশ অভিযান চালায়। কিন্তু পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মহড়ায় অংশ নেওয়া তরুণেরা নদীতে ঝাঁপ দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশের অভিযানের ৩৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
এলাকার মানুষজন এ ঘটনায় আতঙ্কিত। স্থানীয় ব্যবসায়ী শ্যামল মৃধা বলেন, “খোলাখুলিভাবে অস্ত্রের মহড়া, এ দৃশ্য আগে কখনও দেখিনি। কী যে দিন শুরু হলো!” চা বিক্রেতা নূর শেখ বলেন, “ঘটনার পর থেকেই ভয়ে আছি, সামনে কী অরাজকতা অপেক্ষা করছে জানি না।”
স্থানীয়দের দাবি, ভাঙ্গার নৌকাবাইচ শতবর্ষের ঐতিহ্য। ২০০৫ সালের সিরিজ বোমা হামলার পর এটি বন্ধ হয়ে যায়। যদিও ২০০৯ সালে পুনরায় শুরু হয়েছিল, পরে রাজনৈতিক বিরোধের কারণে ২০১৮ সাল থেকে আবার বন্ধ রয়েছে। নৌকাবাইচের বিকল্প হিসেবে তরুণেরা এখন স্পিডবোট ও ট্রলারের মহড়ায় অংশ নেয়।
ভাঙ্গা থানার ওসি মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “অস্ত্র প্রদর্শনের খবর পেয়ে আমরা অভিযান চালিয়েছি, তবে কাউকে আটক করা যায়নি। তদন্ত চলছে।”