সংঘাত ভুলে নতুন পথে ভারত–চীন: জয়শঙ্করের বার্তা, ওয়াং ই দিলেন সহযোগিতার আশ্বাস

মোট দেখেছে : 93
প্রসারিত করো ছোট করা পরবর্তীতে পড়ুন ছাপা

ভারত–চীন সম্পর্কের শীতলতা কাটিয়ে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। দিল্লিতে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই–এর সঙ্গে বৈঠকে তিনি পারস্পরিক শ্রদ্ধা, সংবেদনশীলতা ও স্বার্থকে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার মূল চাবিকাঠি হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

সংঘাত ও বৈরিতার অধ্যায় পেছনে ফেলে সম্পর্কের শীতলতা কাটিয়ে এগিয়ে যাওয়ার বার্তা দিলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। সফররত চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই–এর সঙ্গে সোমবার দিল্লিতে বৈঠক শেষে জয়শঙ্কর বলেন, “আমাদের দুই দেশের সম্পর্ক কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গেছে। এখন সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য খোলামেলা ও গঠনমূলক আলোচনা জরুরি।”

গালওয়ান উপত্যকায় দুই দেশের সেনাদের সংঘাতের পাঁচ বছর পর এবার নতুনভাবে সম্পর্কের উষ্ণতা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে দিল্লি ও বেইজিং। বিশেষজ্ঞদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের অতিরিক্ত শুল্কনীতিই ভারতকে চীন ও রাশিয়ার দিকে আরও ঝুঁকতে বাধ্য করছে। আগামী ২৭ আগস্ট থেকে ভারতের রপ্তানির ওপর ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক কার্যকর হলে মোট শুল্কের হার দাঁড়াবে ৫০ শতাংশে।

ওয়াং ই–এর ভারত সফরের পর এ মাসের শেষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার (SCO) শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে চীন সফর করবেন বলে জানা গেছে।

চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে জয়শঙ্কর বলেন, “আমাদের তিনটি পাথেয় রয়েছে—পারস্পরিক শ্রদ্ধা, পারস্পরিক সংবেদনশীলতা ও পারস্পরিক স্বার্থ। মতপার্থক্য থাকতেই পারে, তবে তা সংঘাত বা প্রতিযোগিতামূলক দ্বন্দ্বে পরিণত হওয়া উচিত নয়।”

ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গেও ওয়াং ই বৈঠক করবেন বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। জয়শঙ্কর জানান, সীমান্তে স্থিতিশীলতা ছাড়া ইতিবাচক দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক সম্ভব নয়।

বৈঠক শেষে বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানায়, চীন ও ভারত সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে একমত হয়েছে। ওয়াং ই বলেন, “ভূরাজনীতি দ্রুত বদলে যাচ্ছে। একতরফা জবরদস্তি মুক্তবাণিজ্য ও আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলছে।”

তিনি আরও বলেন, “২৮০ কোটি মানুষের এই দুই দেশের উচিত বৈশ্বিক দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেওয়া। ঐক্যবদ্ধ হয়ে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রগুলোকে শক্তিশালী করতে হবে। পারস্পরিক আস্থা ও শ্রদ্ধার মাধ্যমে ভারত–চীন সহযোগিতা দুই দেশের জন্যই লাভজনক উইন-উইন পরিস্থিতি তৈরি করবে।”

এদিকে, সিনহুয়া দাবি করেছে, জয়শঙ্কর বৈঠকে তাইওয়ানকে চীনের অংশ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনো এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি।