রংপুরের তারাগঞ্জে রূপলাল দাস ও প্রদীপ লালকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে খুনিদের শনাক্ত করা গেলেও পুলিশ এখনো সবাইকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। ঘটনাটি নিয়ে নিহতদের পরিবার ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
চরম নৃশংসতা ও অমানবিক আচরণের মাধ্যমে রূপলাল ও প্রদীপের প্রাণ হরণ করা হয়





রংপুরের তারাগঞ্জে দুই ব্যক্তিকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। ঘটনায় ছড়িয়ে পড়া একাধিক ভিডিওতে হামলাকারীদের স্পষ্টভাবে দেখা গেলেও পুলিশ তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
৯ আগস্ট রাতে তারাগঞ্জের সায়ার ইউনিয়নের বটতলা বুড়িরহাট এলাকায় এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটে। নিহতরা হলেন—কুর্শা ইউনিয়নের ঘনিরামপুর গ্রামের রূপলাল দাস (৪০) এবং মিঠাপুকুরের ছড়ান বালুয়া গ্রামের প্রদীপ লাল (৩৫)। সম্পর্কে তারা আত্মীয় ছিলেন। রূপলাল স্থানীয় বাজারে জুতা সেলাই করতেন এবং প্রদীপ ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, নিহতদের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ঘটনাস্থলের ভিডিও বিশ্লেষণ করে অন্তত সাতজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। শনাক্ত হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন খায়রুল ইসলাম, রুবেল পাইকার, সোহাগ হোসেন, নজরুল ইসলাম, মিজানুর রহমান, এবাদত হোসেন, মেহেদী হাসান প্রমুখ। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে তারা রূপলাল ও প্রদীপকে মারধরে অংশ নিয়েছেন।
নিহত রূপলালের ছেলে জয়দাস অভিযোগ করেন, “ভিডিও দেখে এবং প্রতিবেশীদের কাছ থেকে জেনেছি, প্রায় ২৫-৩০ জন লোক আমার বাবাকে এলোপাতাড়ি পিটিয়েছে। শত শত লোক দাঁড়িয়ে দেখেছে, ভিডিও করেছে, কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেনি।”
এদিকে, অভিযুক্তদের স্বজনেরা দাবি করেছেন, তাদের পরিবারে কেউ হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত নন। অনেকেই ঘটনাস্থলে শুধু দেখতে বা বাঁচাতে গিয়েছিলেন। তবে নিহতদের পরিবার বলছে, ভিডিওতে হামলাকারীদের স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে, তবু পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করছে না।
তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ ফারুক বলেন, “অভিযুক্তদের শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের ধরতে অভিযান চলছে। ইতিমধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিরা এলাকায় না থাকায় ধরা যাচ্ছে না।”
নিহত রূপলালের স্ত্রী ভারতী দাস ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “বুড়িরহাটের মানুষ আমার নির্দোষ স্বামীকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে। সংসার চালানোর কেউ নেই। আমার মেয়ের বিয়েও পিছিয়ে গেছে। আমি বিচার চাই।”
এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিএনপির স্থানীয় নেতারা বলেন, “মব সৃষ্টি করে নির্দোষ মানুষকে চোর আখ্যা দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। খুনিদের বিচার হওয়া উচিত।”