পাতলা শরীরেও ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি কেন বাড়ছে?

মোট দেখেছে : 79
প্রসারিত করো ছোট করা পরবর্তীতে পড়ুন ছাপা

ফ্যাটি লিভার আজকাল একটি খুব পরিচিত সমস্যা। সাধারণত এটি ওজনাধিক্য বা স্থূলতায় আক্রান্ত মানুষদের বেশি হয়ে থাকে। তবে অনেক সময় দেখা যায়, পাতলা বা স্বাভাবিক ওজনের মানুষদেরও ফ্যাটি লিভার হতে পারে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে একে বলা হয় লিন এমএএফএলডি বা লিন নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ।

পাতলা মানুষের ফ্যাটি লিভার হওয়ার অন্যতম কারণ হলো অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস। ফাস্ট ফুড, তেল-চর্বিযুক্ত খাবার, ভাজা-পোড়া, সফট ড্রিংক বা চিনিযুক্ত খাবার নিয়মিত খেলে লিভারে চর্বি জমতে থাকে। অনেকেই মনে করেন শরীর পাতলা বলে এ ধরনের খাবার খেলে সমস্যা হয় না, কিন্তু বাস্তবে তা নয়।

আরেকটি বড় কারণ হলো জেনেটিক প্রভাব। পরিবারের কারও ডায়াবেটিস, উচ্চ কোলেস্টেরল বা ফ্যাটি লিভার থাকলে পাতলা মানুষও সহজে আক্রান্ত হতে পারেন।

এ ছাড়া শারীরিক কার্যকলাপের অভাব লিভারে চর্বি জমার ঝুঁকি বাড়ায়। শরীর পাতলা হলেও যদি নিয়মিত ব্যায়াম না করা হয় বা সারা দিন বসে থাকা হয়, তাহলে ফ্যাটি লিভার হতে পারে। অনেক পাতলা মানুষের ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস বা ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স সমস্যা দেখা দেয়, যার ফলে শরীরে চর্বি সঠিকভাবে ভাঙতে পারে না এবং তা লিভারে জমে। আবার কারও কারও বংশগতভাবে রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইড বা কোলেস্টেরল বেশি থাকে, যা এই রোগের কারণ হতে পারে।

ফ্যাটি লিভার দীর্ঘমেয়াদে লিভারের প্রদাহ, ফাইব্রোসিস বা সিরোসিস সৃষ্টি করতে পারে। একই সঙ্গে ডায়াবেটিস, হৃদ্‌রোগ, কোলেস্টেরল ও উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ায়।

এ সমস্যার প্রতিরোধে সবচেয়ে জরুরি হলো সুষম খাদ্যাভ্যাস। শাকসবজি, ফল ও আঁশযুক্ত খাবার বেশি খেতে হবে। নিয়মিত ব্যায়ামও গুরুত্বপূর্ণ। কঠিন ব্যায়ামের প্রয়োজন নেই, প্রতিদিন ৩০–৪০ মিনিট হাঁটা বা হালকা ব্যায়াম করলেই উপকার পাওয়া যায়। যেহেতু ফ্যাটি লিভারের সঙ্গে ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল ও উচ্চ রক্তচাপের সম্পর্ক রয়েছে, তাই নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাও জরুরি।

ডা. সাইফ হোসেন খান, মেডিসিন কনসালট্যান্ট, পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ধানমন্ডি জানিয়েছেন, পাতলা মানুষও ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত হতে পারেন এবং এজন্য সচেতন জীবনযাপনই মূল প্রতিরোধ ব্যবস্থা।