আলাস্কার বৈঠক ঘিরে বিশ্বের চোখ এখন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দিকে। চলমান রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে তৈরি হওয়া বৈশ্বিক অস্থিরতায় এই বৈঠক অনেকের কাছে সম্ভাব্য মোড় ঘোরানোর মুহূর্ত। তবে ইতিহাস বলছে, শীর্ষ নেতাদের বৈঠক সবসময় শান্তি বয়ে আনে না।
ট্রাম্প–পুতিন বৈঠক যুদ্ধ থামাতে পারবে, নাকি আরও অনিশ্চয়তা ডেকে আনবে?




কেন বৈঠকটি গুরুত্বপূর্ণ?
ইউক্রেন যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া সরাসরি মুখোমুখি না হলেও দুই দেশের প্রতিদ্বন্দ্বিতা বিশ্ব রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে।
যুক্তরাষ্ট্র স্পষ্ট করে দিয়েছে, তারা রাশিয়ার “কৌশলগত পরাজয়” চায়।
রাশিয়া বলছে, পশ্চিমাদের একচেটিয়া আধিপত্যকে তারা মানতে রাজি নয়।
এ অবস্থায় ট্রাম্প–পুতিন বৈঠক শুধু দ্বিপক্ষীয় নয়, বরং বিশ্ব রাজনীতির দিক পরিবর্তনের ইঙ্গিত বহন করতে পারে।
ইতিহাস কী শিক্ষা দেয়?
অতীতে বহুবার ক্ষমতাধর দেশগুলোর নেতারা আলোচনায় বসেছেন। কিন্তু ফলাফল সবসময় ইতিবাচক হয়নি।
নেমন নদীর বৈঠক (১৮০৭): রাশিয়া ও ফ্রান্সের সম্রাট শান্তির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। পাঁচ বছর পরই নেপোলিয়ন রাশিয়া আক্রমণ করেন।
ভিয়েনা কংগ্রেস (১৮১৫): ইউরোপে শান্তির প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়, কারণ বড় শক্তিগুলো নিজেদের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়েছিল।
জেনেভা শীর্ষ বৈঠক (২০২১): যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার দ্বন্দ্ব মিটেনি, বরং ইউক্রেনে যুদ্ধের আগাম প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল এই বৈঠকের পরপরই।
এবার কী হবে?
আলাস্কার বৈঠক থেকে বড় কোনো সমাধান আসার সম্ভাবনা কম। তবে এটিই হয়তো দীর্ঘমেয়াদি সংলাপের সূচনা হয়ে উঠতে পারে। কারণ—
রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র এখনও বিশ্বের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র।
তাদের সিদ্ধান্ত শুধু ইউরোপ নয়, এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকাকেও প্রভাবিত করে।
পশ্চিমাদের বিকল্প খুঁজতে অনেক দেশ এখন রাশিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।
বিশ্লেষকদের মত
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি বা শান্তি চুক্তি আসবে না। তবে দুই সুপার পাওয়ার মুখোমুখি হলে অন্তত আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার দরজা খোলা থাকে। আর সেটা ভবিষ্যতে শান্তির পথ তৈরি করতে পারে।
ইতিহাসের অভিজ্ঞতা দেখায়—শীর্ষ বৈঠক যুদ্ধ ঠেকানোর নিশ্চয়তা দেয় না। তবুও, ট্রাম্প–পুতিন বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ একটি বার্তা দিয়েছে: দুই পরাশক্তির মধ্যে সরাসরি সংলাপ এখনো অপরিহার্য।